বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ : তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পে মুক্ত-পেশাজীবিদের অনন্য স্বীকৃতি

Basis Outsourcing Award 2015

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) প্রতিবছরের মতো এবারও তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় অনলাইন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং এই কাজে দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বীকৃতিস্বরূপ ১০০ আউটসোর্সিং পেশাজীবি ও প্রতিষ্ঠানকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে| গত ২ নভেম্বর বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব আইটি প্রফেনালদের পুরস্কৃত করা হয়|

অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথিবৃন্দ

বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেসিস সভাপতি শামীম আহসান। বক্তব্য রাখেন ব্যাংক এশিয়ার অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম ও বেসিসের মহাসচিব উত্তম কুমার পাল। আরো উপস্থিত ছিলেন বেসিসের সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, যুগ্ম-মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, পরিচালক সানি মো. আশরাফ খান, কোষাধ্যক্ষ শাহ ইমরাউল কায়ীশসহ বেসিসের সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ, বিচারকবৃন্দ এবং বেসিস সদস্যবৃন্দ।

প্রধান অতিথি এম এ মান্নান তাঁর বক্তৃতায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর কাজের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন| তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন তথ্যপ্রযুক্তিতে তরুণরা তাদের যোগ্যতা ও জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম তার তথ্যপূর্ন বক্তব্যে বাংলাদেশকে ফ্রিল্যান্সিং-এ তথা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ২০ হাজারের অধিক আইটি প্রফেশনালস বের হচ্ছেন| পাশাপাশি সরকার তথ্যপ্রযুক্তিকে শিক্ষা কার্যক্রমে বাধ্যতামূলক করায় এ ধারা আরো বেগবান হবে| তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার প্রসারে দেশের ১২৫ উপজেলায় আইসিটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলায় এ ধরনের আইসিটি ভবন নির্মাণ করা হবে। আর এর মাধ্যমে আগামীতে তথ্যপ্রযুক্তিতেই সবচেয়ে বেশি জনবল তৈরি হবে যার মধ্যে আউটসোর্সিংয়ের সংশ্লিষ্টতা থাকবে সবচেয়ে বেশি।

বেসিস সভাপতির বক্তব্য

বেসিস সভাপতি শামীম আহসান তার বক্তব্যে অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের অনুপ্রাণিত করতে এবং ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মকে আরও অধিকহারে ব্যক্তি পর্যায়ে অথবা আইটি উদ্যোক্তা হিসেবে অনলাইন আউটসোর্সিংকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে বেসিসের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে অংগীকার করেন। এছাড়া বেসিসের বিআইটিএমের মাধ্যমে ২০১৮ সাল নাগাদ ২৩ হাজার দক্ষ জনশক্তি তৈরির করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই সময়ে আইটি সেক্টরে ১০ লাখ প্রফেশনালস তৈরির কার্যক্রমও এগিয়ে চলছে যা একদিন তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় গার্মেন্টস খাতকেও ছাড়িয়ে যেতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মন্তব্য করেন|

এবার যারা অ্যাওয়ার্ড পেলেনঃ

তথ্য-প্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বেসিস ২০১১ সাল থেকে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। প্রতিবছরের ন্যায় পঞ্চমবারের মত আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অ্যাওয়ার্ডের জন্য আবেদন করেছিল। নির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে কয়েকটি ধাপে নিবিড় পর্যালোচনা ও সাক্ষাতকারের মাধ্যমে বিজয়ী নির্বাচন করা হয়।

এবার ৫ টি ক্যাটাগরির মোট ১০০ টি পুরস্কারের মধ্যে ৯৪ টি দেয়া হয়েছে। ৬৪টি জেলা থেকে সেরা ৫৮ জন তথ্য-প্রযুক্তি মুক্ত পেশাজীবিকে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে| বান্দরবন, ভোলা, ঝালকাঠি, খাগড়াছড়ি, মাগুরা ও রাঙ্গামাটিতে কোনো যোগ্য আবেদনকারী না থাকা্য় এসব জেলায় কেউ এই পুরস্কার পায়নি । এছাড়াও ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে ৮ জন এবং  নারী ক্যাটাগরিতে ৩ জনকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ক্যাটাগরিতে ১৫টি কোম্পানি আউটসোর্সিং খাতে বিশেষ অবদানের জন্য বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে| তবে এবারই প্রথম স্টার্টআপ কোম্পানি ক্যাটাগরিতে ১০টি কোম্পানিকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে|

বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হলেন-

নারী আউটসোর্সিং প্রফেশনাল ক্যাটাগরিতে ৩ জন-

১। অজান্তা রেজওয়ান মির্জা

২| সন্ধ্যা রয় এবং

৩| মৌমিতা মেশকাত

একক আউটসোর্সিং প্রফেশনালে ৮ জন পুরস্কার পেয়েছেন ৮ জন-

১। খালেদ মো. শাহরিয়ার

২। মোহাম্মদ কামরুজ্জামান

৩। মো. মেহেরুল ইসলাম

৪। মো. শাহজাহান রাসেল

৫। মো. আরিফুর রহমান,

৬। শরীফুল ইসলাম

৭। আরাফাত জাহান এবং

৮। মোহাম্মদ মনির হোসাইন

আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে ১৫ টি প্রতিষ্ঠান অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে-

১। ভিজার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড

২। এম এফ এশিয়া লিমিটেড

৩। স্টাকচার্ড ডাটা সিস্টেমস লিমেটেড

৪। বোর্ডিং ভিসতা লিমিটেড

৫। টপঅবস্ট্যাক সফটওয়্যার

৬। গ্রাফিক পিপল লিমিটেড

৭। সিমপ্লেক্সহাব লিমেটেড

৮। সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড

৯। নাসেনিয়া লিমিটেড

১০। বিজেআইটি লিমিটেড

১১। বিভিক্রিয়েটিভস লিমিটেড

১২| ভিভিড টেকনোলোজিস লিমিটেড

১৩। ব্রেইন স্টেশন-২৩

১৪। সেফালো-আমরাভি লিমিটেড এবং

১৫। এম অ্যান্ড এইচ ইনফরমেটিকস (বিডি) লিমিটেড

স্টার্টআপ কোম্পানি ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ১০ টি কোম্পানি-

১। মোবিওঅ্যাপ লিমিটেড-এর জে. এইচ. লস্কর

২। উইডেভস-এর নিজামউদ্দীন

৩। জরা সল্যুউশন লিমিটেড-এর গোলাম জিলানী

৪। ইনক্র্যাপ্টো মোবাইল অ্যাপস-এর জি এম তাসনিম আলম

৫। সিলিকন অর্চাড লিমিটেড-এর এস এম শোয়েব আমিন

৬। অ্যাডভান্সড অ্যাপস বাংলাদেশ-এর শফিউল আলম বিপ্লব

৭। ইমপ্লিভিসতা বিডি-র রবিউল ইসলাম

৮। ইকরাসেইস সল্যুশন লিমিটেড-এর লিটন আলী খান

৯। সিকিউপেন্ট-এর সাদমান তানজিম রহমান

১০। আউটসোর্সিং এক্সপার্ট লিমিটেড-এর আতাউর রহমান মোল্লা সুজন।

জেলাভিত্তিক সেরা আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ৫৮ জন-

রংপুর বিভাগ:

নীলফামারি: সঞ্জয় কুমার রায়

পঞ্চগড়: আব্দুল্লাহ আল মামুন

রংপুর: মওদুদ ইসলাম

ঠাকুরগাও: সানোয়ার হায়দার

দিনাজপুর: মো: শাকিল হোসাইন

গাইবান্ধা: মো: মোস্তাফিজুর রহমান

কুড়িগ্রাম:মো. জেনসিন আবেদিন

লালমনিরহাট: আহসান উদ্দিন নোমান

 

রাজশাহী বিভাগ:

নওগা:  আবু ফিরোজ মাহমুদ

পাবনা:  তৌহিদুজ্জামান

রাজশাহী: নাসিরুল হক

সিরাজগঞ্জ: রাশেদুল ইসলাম

বগুরা: শাহানুর এ আলম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জাহিদুল ইসলাম

যশোর: এস এম সাইফুল আলম

জিনাইদা: মো: মাহবুব হাসান রুমান

জয়পুরহাট: মো: রাকিবুল ইসলাম

 

ঢাকা বিভাগ:

মুন্সিগঞ্জ:  সবুর খান

নারায়ণগঞ্জ: বাদশাহ ফাহাদ

রাজবাড়ী: এ. রহমান পাটওয়ারী

শরিয়তপুর: সাদিয়া আফরোজ

ঢাকা: মো: মুশিউর রহমান তালুকদার

ফরিদপুর: মো: শাহাদাত হোসাইন

গাজিপুর: সাইফুল ইসলাম

গোপালগঞ্জ: উত্তম বড়াই

কিশোরগঞ্জ: মো: আশরাফুল মবিন

মাদারীপুর: কাজী নেয়ামুল বাসির

মানিকগঞ্জ:প্রকাশ চন্দ্র মন্ডল

 

মমমনসিংহ বিভাগ:

ময়মনসিংহ: রফিক রহমান

নেত্রকোনা :জাহিদুল ইসলাম

শেরপুর: আব্দুল্লাহ

টাঙ্গাইল: জুবায়ের রহমান

জামালপুর: মো. নুরুল্লাহ

 

সিলেট বিভাগ:

মৌলভীবাজার: নন্দ্বীপ সিনহা

হবিগঞ্জ: মোহাম্মদ আনোয়ার উল কবির চৌধুরী

সুনামগঞ্জ: রাহসালাহ সালাক

সিলেট: মহিউদ্দীন আহমেদ মহসিন

 

খুলনা বিভাগ:

নড়াইল: সৈয়দ মুহাম্মাদ হাসান

চুয়াডাঙ্গা: মো: আসলাম হাসিব

সাতক্ষীরা: ফিরোজ আহমেদ

বাগেরহাট: শেখ বাসাহারুল আলম সানি

খুলনা: শাহারিয়াল কবির

কুষ্টিয়া: রবিউল ইসলাম

মেহেরপুর :এনামুল হক

 

বরিশাল বিভাগ:

পটুয়াখালি: আইয়ুব হাওলাদার রিপন

পিরোজপুর:  শহিদুল ইসলাম

বরগুনা: পুনেন্দ্র বিশ্বাস

বরিশাল: শংকর দাশ

 

কুমিল্লা বিভাগ:

নোয়াখালি: কাজী জিয়াউল হক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: নাজিউর রহমান

চাঁদপুর: মো: ইসমাইল করিম জনি

কুমিল্লা: মো: আতাউর রহমান

ফেনী: মোহাম্মদ হাসান মেহেদী

লক্ষ্মীপুর: মিয়া রায়হান মাহমুদ আরমান

 

চট্টগ্রাম বিভাগ:

চট্টগ্রাম: হিরো বড়ুয়া

কক্সবাজার: আরিফ ইসলাম

 

উল্লেখ্য,বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০১৫ আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল, বেসিস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিআইটিএম), ব্যাংক এশিয়া, পেওনিয়ার ও বিডিজবস ডটকম।

বেসিস কর্তৃক সফল ফ্রিল্যান্সারদের এই অনন্য স্বীকৃতি নতুন প্রজন্মের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে আরো ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টিতে এবং নতুন ফ্রিল্যান্সার তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে তা নি:সন্ধেহে বলা যায়| পাশাপাশি এ পুরস্কার তাদের পেশাজীবনেও যোগ করবে এক নতুন মাইলফলক যা তাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে অধিকতর পেশাগত দক্ষতা এবং সফলতা অর্জনে সহাযক হবে| বেসিস আউটসোর্সিং অ্যাওয়ার্ড ২০১৫-প্রাপ্তদের অভিনন্দন এবং নতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য শুভকামনা|

সার্চ ফ্রিল্যান্সারস্টোরি

Payoneer Signup

জনপ্রিয় লেখাসমূহ

Find us on facebook

Scroll to top